শবে মেরাজ নিয়ে কিছু আলোচনা!!!!
আলহামদুলিল্লাহ আজকে আমাদের শবে মেরাজ রজনী।
মেরাজ অর্থ: হলো ঊর্ধ্বগমন।
লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী উপমহাদেশে শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত। এই রাতে আমাদের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) অলৌকিক উপায়ে উর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং অনেক নবী রাসূলদের সাথে সাক্ষাৎ ও মহান আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
আমাদের মহানবী (সা.) সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় জিবরাইল (আ.) ও মিকাইলের (আ.) এর সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মেরাজের রাতে সফর করেন।
তিনি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে প্রথম আসমানে গমন করেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ,পঞ্চম, ষষ্ঠ,ও সপ্তম আসমানে, এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিম পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিলেন।মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার সংঙ্গে সাক্ষাৎ লাভের সৌভাগ্য অর্জন করেন।
এর সাথে সাথে সেই রাতে রাসূল (সা:)জান্নাতও জাহান্নাম দেখার সৌভাগ্যও অর্জন করে দুনিয়াতে আবার ও ফিরে এসেছিলেন,
••জান্নাত-জাহান্নাম ভ্রমণে নবীজি(সা:) যা বলেছিলেন,,,,
এ সফরে নবীজিকে জান্নাত-জাহান্নামের ভ্রমণও করানো হয়। নবীজি বলেন, জান্নাতের প্রাসাদগুলো মুক্তার তৈরি আর তার মাটি হলো মেশকের। (বুখারি, হাদিস : ৭৫১৭)
নবীজি এ সফরে একদল লোককে দেখলেন, তাদের নখগুলো তামার। নিজেদের নখ দিয়ে তারা নিজের গাল ও বুকে আঁচড় কাটছে। জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল! এরা কারা?উত্তরে বললেন, এরা ওই সমস্ত লোক, যারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের সম্ভ্রমে আঘাত হানত। অর্থাৎ গীবত করত এবং মানুষকে লাঞ্ছিত করত। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৩৩৪০; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮)
আমাদের জন্য মেরাজ একটি গুরুত্ব রাত, কারণ এই মেরাজের এর রজনীর মাধ্যমেই আমরা নামাজ পেয়েছি যা ইসলামধর্মের ৫টা স্তরের মধ্যে দ্বিতীয়। আর ইবাদতের মধ্যে নামাজ হলো আমাদের মুসলমানদের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত, সেটা রাসূল(সা:) অনেক রাকাত থেকে কমিয়ে ৫রাকাতে এনেছিলেন, আমাদের জন্য যেনো সহজ হয় এই ভেবে, এবং তা আমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছিলো এই মেরাজের মাধ্যমে।
•••মেরাজের কাহিনী ;;;;;;;;;
হিজরত হওয়ার আগের কথা, এক রাতে আমাদের নবী (সা:) শুয়েছিলেন। ওনার খুব বেশি ঘুম আসছিলো,কিন্তু ওনার অন্তর ছিলো জাগ্রত অবস্থায়, এমন সময় আগমন করলেন হযরত জিব্রাইল(আ.),তিনি রাসূল(সা :)কে উঠিয়ে নিয়ে গেলেন জমজম কুপের নিকটে, এবং একটি স্বর্ণের পেয়ালা আনা হলো সেটা ছিলো ঈমান ও হিকমত দারা পরিপূর্ন...তাতে জমজমের পানি,,,,
জিব্রাইল (আ.) নবী করিম (সা:) এর বক্ষ মোবারক বিদীর্ণ করলেন এবং বের করে এনেছিলেন নবীজির হৃদয় মোবারক, এবং তা যমযমের পানি দ্বারা ধৌত করলেন, এর পর আবার তা নবীজি (সা:) এর বক্ষে রেখে দিলেন সেভাবেই ছিলো আগে।
কারণ ঈমান ও হিকমত দ্বারা পরিপূর্ণ করা হয়ে ছিলো দআমাদের নবীজি(সা :)এর কলব কে।
অতঃপর নিয়ে আশা হলো রাসূল (সা:)কে বহন করার জন্য একটি সওয়ারী। প্রাণীটি গাধার চেয়ে বড়, এবং ঘোড়া থেকে ছোট, যার নাম ছিলো বুরাক, এবং সেটার রংছিলো সাদা।
এটা এমন ছিলো যে, তার একটা কদম পড়ে আমাদের দৃষ্টির শেষ যতটুকু আমরা দেখতে পাই ঠিক অতো পরিমান,
এরকম করেই নবী করিম (সা.) কে নিয়ে যাওয়া হলো বায়তুল মুকাদ্দাসে,খুব দ্রুতই পৌঁছে গেলেন বাইতুল মুকাদ্দাসে। বুরাক টা বেঁধে রাখা হলো পাথর ছিদ্র করে, সেখানে বেঁধে রাখছিলেন অন্যান্য নবী রাসূলগণ নিজেদের বাহন গুলোকে,
এবং নবীজি সেখানে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন, আর নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় জিব্রাঈল (আ.) নবীজির সামনে দুটি পেয়ালা পেশ করলেন,একটি ছিলো দুধের অপরটি ছিলো শরাবের,,,,,নবীজি দুধের পেয়ালা গ্রহণ করলেন, তখন জিব্রাঈল (আ.) বললেন,,আপনি (দ্বীনের) স্বভাবসিদ্ধ বিষয়টি গ্রহণ করেছেন, আর যদি আপনি মদের পেয়ালা টা গ্রহণ করতেন-- তাহলে আপনার উম্মত বিভ্রান্ত হয়ে পড়তো!!!
{নবীজি মদের পেয়ালা নেওয়ার পরিবর্তে দুধের পেয়ালা গ্রহণ করায় জিবরীল (আ.) বলেন, আপনি যদি মদের পেয়ালা নিতেন তাহলে আপনার উম্মত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ত। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৯৪)}
এবার নবীজিকে আসমানে উঠানোর কাহিনী,,,
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর প্রথম আসমানে আগমন যা ছিল:--
••••নবীজিকে নিয়ে যখন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম প্রথম আসমানে গিয়ে ছিলেন তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো: আপনার সাথে ওনি কে? জিব্রাইল (আ:)বললেন, ওনি মুহাম্মাদ।এর পরে জিজ্ঞাসা করা হলো: তার কাছে কি আপনাকে পাঠানো হয়েছে? বললেন, হাঁ। এরপর নবীজিকে অভিনন্দন জানালেন মারহাবা, উত্তম আগমনকারীর আগমন ঘটেছে!!! খুলে দেওয়া হলো নবীজির জন্য আসমানের দরজা সমূহ ।সেখানে ছিলেন: হযরত আদম (আ.)। জিব্রাঈল(আ.)পরিচয় করিয়ে দিলেন, নবীজি(সা:) আদম(আ:)কে সালাম দিলেন, এবং বাবা আদম(আ:) সালামের জবাব দিলেন, নবীজিকে সুস্বাগতম ও অভিনন্দন জানালেন- মারহাবা,আমার নেককার পুত্র ও নেককার নবী এবং হযরত আদম (আ.) নবীজির জন্য দোয়া করলেন।
নবীজি (সা.) যখন প্রথম আসমানে যান- সেখানে দেখেন এক ব্যক্তি, তার ডান পাশে কিছু রূহ আর বাম পাশে কিছু রূহের কাফেলা। তিনি ডানদিকে তাকালে হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন। তিনি নবীজিকে সম্ভাষণ জানালেন। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল! ইনি কে? জিবরাঈল বললেন, ইনি আদম (আ.)আর তার দুই পাশে তার সন্তানদের রূহ। ডানদিকেরগুলো জান্নাতী আর বামদিকেরগুলো জাহান্নামী। এজন্য তিনি ডানদিকে তাকিয়ে হাসেন আর বামদিকে তাকিয়ে কাঁদেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৪২)
•••নবী করিম (সা:) কে নিয়ে যখন দ্বিতীয় আসমানে নিয়ে গিয়ে ছিলেন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম।
দ্বিতীয় আসমানে আগমনের পরে তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো, ঠিক প্রথম আসমানের মতো আবারো জিজ্ঞাসা করা হল? ওনি কে জিব্রাইল (আ:) বললেন ওনি মুহাম্মদ!!!! এরপর নবীজিকে অভিনন্দন জানানো হলো, নবীজি সেখানে দেখতে পেলেন দুই খালাতো ভাই হযরত ঈসা (আ.) ও ইয়াহইয়া (আ.)-কে। তাদেরকে নবীজি(সা:)সালাম দিলেন, তারা উভয়ে নবীজিকে স্বাগতম জানালেন,, মারহাবা, আমাদের পুণ্যবান ভাই এবং সজ্জন নবী, এবং তারা উভয়ে নবীজি(সা:)জন্য দোয়া করলেন।
•• নবীজি (সা:)কে জিব্রাইল আলাই সাল্লাম তৃতীয় আসমানে নিয়ে গেলেন, তৃতীয় আসমানের দিকে নিয়ে গেলেন এবং সেখানেও ঠিক আগের মতোই জিজ্ঞাসা করা হলো ওনি কে?? এবং জিব্রাইল (আ.) বললেন ওনার নাম মুহাম্মদ!! তৃতীয় আসমানে ছিলেন,হযরত ইউসুফ (আ.)।অতঃপর হযরত ইউসুফ (আ:) কে নবীজি(সা:)সালাম দিলেন, এবং ইউসুফ (আঃ) নবীজিকে সু- স্বাগতম জানালেন।
•• এরপরে জিব্রাইল আলাই সাল্লাম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিয়ে চতুর্থ আসমানের জন্য আগমন করলেন, এবং জিব্রাইল আলাই সালাম কে আবারো জিজ্ঞাসা করা হলো : উনি কে??? তখন জিব্রাইল আলাই সালাম আবারো বললেন উনি মোহাম্মদ!!! চতুর্থ আসমানে ছিলেন হয়রত ইদ্রিস আলাইহিস সালাম..... নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম উনাকে সালাম জানালেন। এবং হযরত ইদ্রিস আলাইহিস সাল্লাম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে স্বাগতম জানালেন, এবং হযরত ইদরীস (আ.) নবীজি(সা:)এর জন্য দোয়া করলেন।
•••• এবার আবারো জিব্রাইল আলাই সাল্লাম নবীজিকে নিয়ে পঞ্চম আসমানে আগমন করলেন,, পঞ্চম আসমানে ছিলেন হযরত হারূন (আ.). একইভাবে সেখানেও জিব্রাইল আলাই সাল্লাম কে প্রশ্ন করা হলো উনি কে?? জিব্রাইল আলাই সাল্লাম উত্তর দিলেন উত্তর দিলেন উনি মোহাম্মদ। এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে সালাম দিলেন।এবং হারুন আলাই সাল্লাম নবীজিকে অভিনন্দন জানালেন, এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর জন্য দোয়া করলেন।
•••• আবারো জিব্রাইল(আ:)নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন,,,, এবং ষষ্ঠ আসমানে গেলেন, আবারো জিব্রাইল আঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলো ওনি কে?? এখন আবারো জিব্রাইল আলাই সাল্লাম উত্তর দিলেন, উনি মোহাম্মদ!! তারপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হযরত মুসা আলাই সালাম কে সালাম দিলেন, এবং মুসা আলাই সালাম রাসল (সা:)কে আহ্বান জানালেন,এবং হযরত মূসা (আ.) নবীজির জন্য দোয়া করলেন ও সুন্দর পরামর্শ দিলেন।
এরপর নবীজিকে নিয়ে জিব্রাইল (আ:)সপ্তম আসমানের দিকে উঠলেন,, সপ্তম আসমানে ছিলেন হযরত ইব্রাহিম (আঃ)। জিব্রাইল আঃ কে প্রশ্ন করা হলো উনি কে?? এখন জিব্রাইল আলাইহিসসালাম উত্তর দিলেন উনি মোহাম্মদ!! এবং তখন জিব্রাইল (আ.) পরিচয় করিয়ে দিলেন নবীজিকে ইনি আপনার পিতা সালাম করুন। এবং নবীজি হযরত ইবরাহীম (আ.)কে সালাম দিলেন।
এইসময়ের কথা বলতে গিয়ে নবীজি বলেন,তখন হযরত ইবরাহীম (আ.) বাইতুল মামুরে হেলান দিয়ে ছিলেন,
হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে মুলাকাত হলে তিনি নবীজিকে বলেন, আপনি আপনার উম্মতের কাছে আমার সালাম পৌঁছাবেন। আর তাদেরকে বলবেন, জান্নাতের মাটি পবিত্র ও সুঘ্রাণযুক্ত, এর পানি সুমিষ্ট এবং এর ভূমি উর্বর ও সমতল। আর এর বৃক্ষ হচ্ছে-
سُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ لِلهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَر.
উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।
অর্থ : আল্লাহ পবিত্র, সব প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬২)
•••••বাইতুল মামুর,,,
বাইতুল মামুর এমন এক জায়গা, যেখানে প্রতিদিন এমন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসে,সে সত্তর হাজার ফেরেস্তা আর ফিরে আসে না, এভাবে প্রতিদিন সত্তর হাজার করে করে ফেরেশতাদের নতুন নতুন কাফেলা আসতে থাকে।
••••নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে নিয়ে যাওয়া হল,, সিদরাতুল মুনতাহার দিকে।
সেখানে প্রতিটি গাছের একেকটি পাতা হাতির কানের মতো, আর একেকটি ফল মটকার মতো বড় বড়,, যখন ওটাকে আল্লাহর বিধান আচ্ছন্ন করে নিলো তখন তা পরিবর্তিত হয়ে গেল,,,সৃষ্টির কারো সাধ্য নেই তার সৌন্দর্যের বিবরণ দেওয়ার । জিব্রাইল (আ.)বললেন, এটা সিদরাতুল মুনতাহা।
এখানে চারটি নহর। দুটি অদৃশ্য আর দুটি দৃশ্যমান। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, দৃশ্যমান নদীদুটি কোনগুলো? জিব্রাইল(আ.)বললেন, অদৃশ্যমান দুটি জান্নাতে। আর দৃশ্যমান দুটি হলো নীল নদ ও ফুরাত নদী।
উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ,,,,
এরপর আল্লাহ তাঁয়ালা নবীজির প্রতি যে ওহী পাঠালেন,দিনরাতে উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিলেন,,নবীজি আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাতের এ হাদিয়া নিয়ে যখন ফেরত দুনিয়ার উদ্দেশ্যে,,, তখন দেখা হযরত মূসা (আ.)এর সাথে, হযরত মূসা (আ.)জিজ্ঞাসা করলেন নবীজিকে, আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার উম্মতের জন্য কী নিয়ে যাচ্ছেন / কী দিয়েছেন??? নবীজি বললেন, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ। তখন হযরত মূসা(আ :) বললেন, আপনার উম্মত রাত-দিনে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারবে না। আপনার আগে আমি উম্মত চালিয়ে এসেছি,, আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলছি আপনি আল্লাহর কাছে গিয়ে আরো কমিয়ে আনেন,,,,
মুসা (আ:)এর কথা মতো নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম. আল্লাহর কাছে গিয়ে নামাজ কম করে দেওয়ার জন্য আবেদন করলেন, আল্লাহ তায়ালা কিছুটা কমিয়ে দিলেন নামাজকে, এবং আল্লাহর নবী নামাজ নিয়ে আসার সময় আবারও মুসা (আ:)এর সাথে দেখা হয় এবং তিনি আবারও নবী কে বলেন আরো কম করে আনতে নবীজি আবারো আল্লাহ তাআলার কাছে আবেদন করেন এবং কমান এভাবে কয়েকবার কমান, শেষে আল্লাহ তায়ালা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত করে দিলেন, নবীজি তা নিয়ে ফেরার পথে আবার হযরত মূসা (আ.)এর সাথে দেখা হলো এবং আবারও তিনি কমিয়ে আনার জন্য বললেন,শেষবার আল্লাহ বলেন, মুহাম্মদ! এই হলো দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এগোলোর প্রত্যেক নামাজের বিনিময়ে দশ নামাজের সাওয়াব দেওয়ার হবে আপনার উম্মতকে,,এভাবে আপনার উম্মতরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের সওয়াব পায়ে যাবে।
কেউ কোনো ভালো কাজের ইচ্ছা করবে কিন্তু করতে পারবে না, তার জন্যও নেকি রয়েছে একটি করে,আর যদি ভালো কাজটি করে তাহলে তার জন্য দশ নেকী। আর কেউ কোনো মন্দ কাজের ইচ্ছা করলে কোনো গুনাহ লেখা হবে না, তবে যদি সেই গুনাহটা করে ফেলে তাহলে একটি গুনাহ লেখা হবে।
{{নবীজি যখন সালাত নিয়ে ফেরত আসছিলেন। হযরত মূসার সাথে দেখা হলো। মূসা আ. এবার শুনে বললেন, আপনি যান, আরো কমিয়ে আনুন। আপনার উম্মত পারবে না। বনী ইসরাঈলের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা আছে। নবীজি বললেন, আমার আর কিছু বলতে লজ্জা হচ্ছে! (বুখারি, হাদিস: ৩৮৮৭; মুসলিম, হাদিস: ১৬২, ১৬৪)}}
নবীজি এ সফরে মুসা (আ.) ও হযরত ঈসা (আ.)-এর শারীরিক গড়নেরও বিবরণ দেন। নবীজি বলেন, আমি ইবরাহীমের আকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৯৪)
এ সফরে নবীজির সাথে পূর্ববর্তী নবীগণের সাক্ষাৎ হয়। তখন তিনি নামাযে সকলের ইমামতি করেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৭২)
এ সফরে নবীজি দেখলেন, একদল লোকের ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কারা? জিবরাঈল বললেন, এরা বক্তৃতা করত বটে, কিন্তু নিজেরা আমল করত না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১২২১১, ১২৮৫৬)
••••মিরাজ থেকে ফেরার পরের ঘটনা......
রাসূলুল্লাহ (সা.) মিরাজ থেকে ফিরে হাতীমে বসাঅবস্থাই,,মুশরিকরা ইসরা ও মেরাজের ঘটনা শুনে উপহাস করতে লাগল, বিভিন্নভাবে নবীজির দিকে প্রশ্নের তীর ছুড়তে লাগলো তারা,,
বাইতুল মুকাদ্দাসের পূর্ণ বিবরণ শুনতে চাইলো তারা,নবীজি এঁদের এমন প্রশ্নে খুবই বিব্রত হয়ে ওঠেন। কারণ এত রাতে কি বাইতুল মুকাদ্দাসকে ওরকম নিখুঁতভাবে দেখতে গিয়েছেন!!
নবীজি বলেন, এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আমি আগে কখনো পড়িনি,, আল্লাহ তাআলাতার প্রিয় বন্ধুকে এমন সময় কী সাহায্য করবেন না!!! অবশ্যই করবেন!!!!এবং আল্লাহতাঁয়ালা তার প্রিয় বন্ধু নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে সাহায্য করলেন, এবং নবীজির চোখের সামনে মেলে ধরলেন বাইতুল মুকাদ্দাসের সকল দৃশ্য।
••নবীজি যখন হাউজে কাউসার এ ছিলেন।
আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্য যে বিশেষ উপহার হাউজে কাউসার রেখেছেন প্রথম আসমানে নবীজিকে তা দেখানো হয়। নবীজি সেই কাউসারের বিবরণও দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৭৫১৭)
••••••মক্কার কোনো পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন হযরত আবু বকর (রা.)কে মক্কার কাফেররা তাকে এ বিস্ময়ের কথা বললেন,, এবং তারা বললো তবুও কি তুমি তাকে বিশ্বাস করবে? হযরত আবু বকরের হৃদয়ে ঈমানের বহ্নিশিখা জ্বলে উঠলো, তিনি এক আকাশ আস্থা নিয়ে সুদৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠলেন, আমি তো এর চেয়েও আরো দূরের অনেক জটিল বিষয়েও তাঁকে বিশ্বাস করি। তাঁর কাছে আসা আসমানী বার্তাগুলোর ওপর রয়েছে আমার অটল বিশ্বাস ও সুদৃঢ় ঈমান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬২)
••••মিরাজের সফরে নবীজির উপহার হিসেবে যা ছিলো,,
এ সফরে নবীজিকে তিনটি উপহার দেওয়া হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো এবং এই উম্মতের যারা শিরক থেকে বেঁচে থেকে মৃত্যুবরণ করবে— তাদের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়ার ঘোষণা। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৩)
এভাবেই শেষ হয় মেরাজের ঘটনা। আর এই ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো আজকের রাতটা খুব সুন্দর করে আমলের মাধ্যমে কাটানো,, শুকরিয়া আদায় করা, প্রত্যেক নবী রাসুলের জন্য ও সাহাবায়ে কেরামদের কথা স্মরণ করা। এবং এই রাতের উসিলায় আমাদের গুনাহ গুলোর জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাওয়া। এবং বেশি বেশি নামাজ আদায় করা,, কারণ আজকের দিনেই আমরা এই নামাজটা পেয়েছি,,,,
Comments
Post a Comment