শিক্ষা যদি হয় জাতির মেরুদন্ড তাহলে শিক্ষক কিভাবে হয় অপমানিত?

 মানুষ পৃথিবীতে সব থেকে দামি। তাই মানুষকে বলা হয় আশরাফুল মাখলুকাত,

 পৃথিবীতে যখন আমরা প্রথম জন্মগ্রহণ করি, তখন আমাদেরকে কানে আযান দেওয়ার হয়, কিন্তু তখনও আমরা আযান সম্পর্কে কিছু জানে না, তবে এটা বোঝানো হয় যে, এখন থেকেই আমাদের শিখার জার্নিটা শুরু হয়েছে, আমরা কিছু বুঝি বা না বুঝি, একেক জনার পরে একেকজনে কোলে নিই, একেকজন একেক নামে সম্বোধন করে, সবাই আদর করে, সকলে কোলে নিয়ে যার যেভাবে ভালো লাগে সেভাবে অনেক কিছু শিখানোর চেষ্টা করে, আর ছোট বাচ্চাও তখন মনে হয় যেসব বুঝতে সেবা বোঝার চেষ্টা করতেছে, অর্থাৎ একটা মানুষ পৃথিবীতে আসার পর থেকেই বোঝা গেল যে তার জন্য সব কিছু  শিখা শুরু হয়ে গেছে,,, ধীরে ধীরে সে যত বড় হবে তার শিখার অবস্থানটাও বড় হতে থাকবে।

আর এই শিক্ষাটা হতে পারে পরিবার থেকে আশেপাশের মানুষ থেকে এবং কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছ থেকে, সে যত বড় হবে,যত বেশি মানুষের সাথে পরিচিত হবে ততো বেশি মানুষ থেকে শিক্ষার সুযোগ পাবে,

শিক্ষা নিয়ে যদি আলোচনা করা হয়,তাহলে আলোচনা করে কখনোই শেষ করা যাবে-না, কারণ মানুষের শিক্ষাটা শুরু হয় জম্ম থেকে আর শেষ হয় মৃত্যুর আগ মুহূর্ত অর্থাৎ কালিমার মাধ্যমে, আমাদের শিক্ষাটা শুরু হয় আজান দিয়ে আর শেষটা হয় কালিমা দিয়ে।


দুনিয়াতে শিক্ষা হয় দুই প্রকার..

**জাগতিক শিক্ষা,,

** দ্বীনী শিক্ষা,,

•• শিক্ষা হলো--দুনিয়াতে মানুষ তাঁদের প্রয়োজন পুরাকরার জন্য সে শিক্ষাটা লাগে সেটাই  হচ্ছে জাগতিক শিক্ষা,যেমন:-চিকিৎসা, তথ্য-প্রযুক্ত এরূপ যা যা আছে। 

•• দ্বীনি জ্ঞান হলো :--আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মেনে চলার জন্য রাসূল (সা:)এর উপর নাজিলকৃত সকল আদেশ নির্দেশের  ইলম অর্জন করা,কারণ এই ইলমের উদগাৎ ছিলো ওহীর মাধ্যমে।

আলহামদুলিল্লাহ দুনিয়াতে আল্লাহ তাঁয়ালার এতো প্রাণী থাকার পর ও যে আপনি আমাকে পছন্দ করে মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এবং জ্ঞান অর্জন করার মতো  সুজোগ দিয়েছেন,এটার জন্য আল্লাহর কাছে আমাদের শুকরিয়া আদায় করেও কখনো শেষ করা যাবেনা, কারণ আল্লাহ তাঁয়ালা যদি আমাদেরকে মানুষ হিসেবে সৃস্টি না করে অন্য কোনো প্রাণী হিসেবে দুনিয়াতে পাঠাতেন তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে দিন কাটাতে হতো যেমন দিন কাটায় মানুষ ছাড়া পৃথিবীর প্রতিটা প্রাণী, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা চোটা-চোটিতেই থাকে, কোথায় ও কখনো স্থির থাকেনা বা থাকতে পারেনা।

 অন্য দিকে আলহামদুলিল্লাহ  আমি আপনি  আল্লাহর দেওয়া প্রদ্যত এই ইলমের জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে আমরা সেভাবে দুনিয়াতে সুন্দরভাবে জীবন পরিচালিত করতে পারবো, ঠিক তেমনি আল্লাহকে সুন্তুষ্ট করে আখেরাতের জন্য উত্তম অবস্থান ও তৈরি করে নিতে পারবো, দুনিয়াতে ভালো আমলের মাধ্যমে, অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী সৎ কে সৎ বলা অসৎ কে অসৎ বলা,অন্যই দেখলে প্রতিবাদ করা এবং ভালোকিছু দেখলে তার  প্রশংসা করা, ও হারাম  খাদ্য থেকে বিরত থাকা এবং সৎ পথে উপার্জন করার চেষ্টা করা, কারণ আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহীর মধ্যমে আমাদেরকে হালাল হারামের পার্থক্য করে খাদ্য গ্রহনের আদেশ করেছেন,আর অন্যান্য প্রাণীদেরকে আল্লাহ তাঁয়ালা তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী যা  যা দরকার হবে সব দিয়েই পাঠিয়েছেন দুনিয়াতে, দুনিয়াতে আশা পর তাঁদের জানার না প্রয়োজন হবে এমন কিছু খুঁজার মতো নেই তাঁদের। তবে আপনার আমার পৃথিবীতে আশার পর থেকেই অজানা ইলম জানার পিছনে চোড়তে হবে, জানা বিষয়গুলো অন্যকে জানাতে হবে, সে মতো আমল করতে হবে,

ইসলামে এ জ্ঞানকে এতোটা গুরুত্ব দিয় যে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি এর উপর যখন সর্ব প্রথম ওহী নাজিল হয়ে ছিলো তখন "ইকরা" অর্থাৎ পড় তুমি তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন,ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। হেরা গুহায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর সর্বপ্রথম যে ওহী নাযিল হয় তা হচ্ছে, ‘পড়, তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।                                    সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিন্ড থেকে,-                (সূরা আলাক : ১-২) 

প্রতিপালকের দিকনির্দেশনে যেভাবে মানুষ জীবনের আলো পেয়েছে,ঠিক সেভাবেই আল্লাহর কাছ-থেকে সে পেয়েছে ইলমের নূর, আর সেই ইলমের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে,এবং অন্যকে ও জানাতে সুবিধা হবে সেই ইলম,কারণ আমরাই পৃথিবীর সেরা জীব, আমাদের উপরই পৃথিবী শাসনের দায়িত্ব। আর ওহীর সেই জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেই  আমাদের এই শাসনটা খুব সুন্দর করে পরিচালিত করতে পারবো,

••আর জাগতিক জ্ঞানের দারা আমরা যেটা  করে থাকি, পৃথিবীতে  মানুষ এর সুবিধারতে অনেক কিছুই আছে সেগুলো আমরা জাগতিক জ্ঞানদ্বারা অর্জন করতে পারি,

 তবে জাগতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে যেনো আমারা কখনো আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত না হয়, আমরা যেনো জাগতিক জ্ঞানের মাধ্যমে কোনো মানুষের ক্ষতি নকে করি,  অন্যের হক নষ্ট না করি, যদি এমন কিছু করি তাহলে তার জন্য আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হিসেবে ।                                                          *উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আমার কাছে মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে আসো। আর তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো প্রতিপক্ষের তুলনায় প্রমাণ-সাক্ষী পেশ করার ব্যাপারে অধিক বাকপটু,তবে জেনে রেখো, বাকপটুতার কারণে যার পক্ষে আমি তার ভাইয়ের প্রাপ্য হক ফায়সালা করে দিই, তার জন্য আসলে আমি জাহান্নামের অংশ নির্ধারণ করে দিই। কাজেই সে যেন তা গ্রহণ না করে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৬৮০)

তাই কারো ক্ষীতি করা যাবেনা জাগতিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে,, 

বর্তমানে দ্বীনের প্রচার-প্রসারের জন্য কম্পিউটারের জ্ঞান অর্জন,বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রকাশনার অত্যাধুনিক মাধ্যমগুলোর জ্ঞান অর্জন করা ও খুব প্রয়োজন হয়ে আমাদের জন্য,দুনিয়ার নিয়ম ও ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে রাখার জন্য যেমন জাগতিক জ্ঞান প্রয়োজন তেমনি দ্বীনের হিফাযতের জন্য ও দ্বীনি শিক্ষা প্রয়োজন।    

 *কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, {"কেন বের হয় না প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একটি দল, যাতে তারা দ্বীনের তাফাক্কুহ অর্জন করে এবং ভীতি প্রদর্শন করে তাদের জাতিকে যখন তারা ফিরে আসে তাদের নিকট। সম্ভবত তারা আল্লাহ ভীতি অর্জন করবে।"}।                 (সূরা তাওবা:১২২)

*এজন্য প্রত্যেক জনপদের অর্থাৎ এলাকা বা গ্রামের মধ্যেই দ্বীনের ইলমে পারদর্শী ব্যক্তি  ফরযে কিফায়া, আর এই উদ্দেশ্যে দ্বীনের ইলমের চর্চা অব্যাহত রাখা এবং সমাজেকে সুন্দর ভাবে পরিচালিত করা অপরিহার্য কর্তব্য।

*কারণ কুরআন-সুন্নাহর আমল ও তার অনুসরণ বাস্তবায়না যদি না হয় এর ফলে সমাজের সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও ফেৎনা ভর-পুর হয়ে যাবে । বিজ্ঞান ও তথ্য -প্রযুক্তিতেতে সমাজের যতই উন্নতি করুক না কেনো ঈমান ও আল্লাহর ভয় -ভীতি না থাকলে তা মানুষের কোনো লাভ করতে পারবে নাক্ষতি ছাড়া তাই সকল নতুনত্ব আবিষ্কারকে অর্থপূর্ণ ও কল্যাণকর করে তুলার জন্যই অপরিহার্য হলো ওহীর ইলমকে অনুস্বরণ করা।

**পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে ইলম দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন বহুগুণ।’ সূরা মুজাদালা : ১১

**রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ আল্লাহ তাআলা যাকে প্রভূত কল্যাণ দিতে চান তাকে দ্বীনের প্রজ্ঞা দান করেন।’ - সহীহ বুখারী ১/১৬

**রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইলম শিক্ষার জন্য কোনো পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জান্নাতের পথ আসান করে দেন।’-সহীহ মুসলিম ২/৩৪৫

**রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির চেহারা উজ্জ্বল করে দিন, যে আমার কোনো হাদীস শুনেছে। অতঃপর অন্যের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।’-সুনানে আবু দাউদ ২/৫১৫

**রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ আল্লাহ তাআলা যাকে প্রভূত কল্যাণ দিতে চান তাকে দ্বীনের প্রজ্ঞা দান করেন।’ - সহীহ বুখারী ১/১৬


**অন্য হাদীসে আছে, ‘আলিমগণ নবীগণের ওয়ারিস।’-তিরমিযী ২/৯৭

**আরেক হাদীসে এসেছে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ইলম অনুসন্ধানে বের হয় সে ফিরে আসা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায় থাকে।’-জামে তিরমিযী ২/৯

**অন্য হাদীসে বলা হয়েছে, ‘যে দুনিয়াবী স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এমন ইলম শিখল, যা শুধু আল্লাহর জন্যই শেখা হয় সে কিয়াতমতের দিন জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।-সুনানে আবু দাউদ ২/৫১৫


এখানে উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক মানুষের মেধা, ও ধারা কখনো এক হয় না, পৃথিবীর যত কিছু আছে সব কিছু একজন মানুষের পক্ষে শিক্ষা সম্ভব হয় না কখনো, পৃথিবী শুরু হওয়ার পর থেকে কখনো কোন মানুষ সব বিষয়ে পারদর্শী ছিল না।

সমাজে যে ব্যক্তি ডাক্তার হয় সে একই সাথে অর্থনীতিবিদ, সাহিত্যিক, আইনবিদ, কৃষিবিদ, দার্শনিক সবকিছু হতে পারে না এতো সময় ও সুযোগ পায়না,হতে সম্ভব ও না, তাই ইসলামের দিকনির্দেশনা হচ্ছে প্রতিটি প্রয়োজনীয় বিষয়ে সমাজের কিছু কিছু লোক পারদর্শী হওয়া সে যেবিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখে,  এভাবে পুরো সমাজে শান্তি বিরাজ করবে,একটা পরিবারের মতো, সকল মুসলিম আমরা ভাই ভাই। মুসলিম শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ-ব্যবস্থা এটাই। প্রতিটা যদ্ধ করার সময় সকল মুসলিম জাতি এক ছিলো বলেই কিন্তু বিজয় আনতে পেরেছিলো,

 মুসলমান যদি তাদের গৌরবময় অতীত ফিরে পেতে চায় তাহলে আবারো সকলকে একত্রে একই পন্থা অবলম্বন করতে হবে।


 •••শিক্ষকের গুরুত্ব!!

একটি দেশ,  পরিচালিত করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন হয় শিক্ষার.. আর সেই শিক্ষাটা একজন শিক্ষকই দিতে পারেন, তাই প্রথমে আমাদের সেই শিক্ষককে মূল্যায়ন করতে হবে, কারণ শিক্ষককে মূল্যায়ন করার মাধ্যমে আমরা বাচ্চাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারব, বাচ্চারা মাটির মতো, শুরু থেকে তাদেরকে যেভাবে গড়ে তোলা হবে তারা ওই ভাবেই থাকবে, সম্মান শ্রদ্ধা তাদেরকে আমরা যেটাই শিখাব তারা সেটাই শিখবে, বলা কথার থেকে ও চোখে দেখা দেখা জিনিসটা মানুষ আয়ত্ত করে বেশি, প্রত্যেকটা মানুষ তার জীবন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে তার একমাত্র অস্ত্র হলো শিক্ষা, শিক্ষা ছাড়া মানুষ মেরুদন্ডহীন,

আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও শিক্ষাতে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, "শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করতে সুদূর চীন দেশে হলেও যাও"। 

সুতরাং আমাদের জীবনে শিক্ষার গুরুত্ব কিন্তু ব্যাপক....


**ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা,

শিক্ষকরা মানুষ তৈরি করার কারখানা । একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে ওঠার পেছনে বাবা-মা’র যেমন অবদান থাকে. ঠিক শিক্ষকেরও তেমন অবদান থাকে, অনেক ক্ষেত্রে তো মা বাবার থেকেও শিক্ষকের অবদান তাই বেশি থাকে,

আল্লাহ তাআলা শিক্ষকদের আলাদা মর্যাদা দিয়েছেন। তাদের সম্মানের মাধ্যমেই কিন্তু আমরা আমাদের শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারবো।

তাই মসমাজে শিক্ষকমানেই মর্যাদা ও সম্মানিত একজন ব্যক্তি,

পবিত্র কোরআনে নাজিলকৃত প্রথম আয়াতে জ্ঞানার্জন ও শিক্ষাসংক্রান্ত কথা বলা হয়েছে।


প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা জ্ঞান অর্জন করো এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আদব-শিষ্টাচার শেখো। এবং যার কাছ থেকে তোমরা জ্ঞান অর্জন করো, তাকে সম্মান করো। ’ 

(আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস ৬১৮৪)

সমাজে শিক্ষকদের সম্মানের দৃষ্টিতে দেখার ঐতিহ্য ও রীতি বেশ প্রাচীন। শিক্ষা অনুযায়ী মানবচরিত্র ও কর্মের সমন্বয় সাধনই হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তাগিদ। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহর পরে, রাসূলের পরে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা মহানুভব যে জ্ঞানার্জন করে ও পরে তা প্রচার করে। ’ 

(মিশকাত শরিফ)


জায়েদ ইবনে সাবেত (রা.) একবার তার সওয়ারিতে (বাহন) ওঠার জন্য রেকাবে (সিঁড়িতে) পা রাখলেন। তখন ইবনে আব্বাস (রা.) রেকাবটি শক্ত করে ধরলেন। এ সময় জায়েদ ইবনে সাবেত (রা.) বললেন, হে রাসুল (সা.)-এর চাচাতো ভাই, আপনি হাত সরান। উত্তরে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, না, আলেম ও বড়দের সঙ্গে এমন সম্মানসূচক আচরণই করতে হয়। (আল ফকিহ ওয়াল-মুতাফাক্কিহ ২১৯৭)

উমর (রা.) ও উসমান (রা.) তাদের শাসনামলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তারা শিক্ষক ও ধর্মপ্রচারকদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন। আবদুর রহমান ইবনুল জাওজি (রহ.) তার বিখ্যাত ‘সিরাতুল উমরাইন’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) হজরত ওসমান ইবনে আফ্ফান (রা.)-এর যুগে মুয়াজ্জিন, ইমাম ও শিক্ষকদের সরকারি ভাতা দেওয়া হতো। 

(কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা ১৬৫)


উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-ও তার যুগে ইয়াজিদ ইবনে আবি মালেক ও হারেছ ইবনে ইউমজিদ আশারি (রহ.)-কে ওই অঞ্চলে দ্বীন শেখানোর কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। বিনিময়ে তাদের জন্য সম্মানজনক পারিশ্রমিকও নির্ধারণ করা হয়েছিল। অবশ্য ইয়াজিদ (রহ.) তা গ্রহণ করলেও হারেছ (রহ.) তা গ্রহণ করেননি।

 (কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা ২৬২) 



আল্লাহ তাআলার আদেশে মানুষ যেমন লাভ করেছে জীবনের আলো তেমনি আল্লাহরই নিকট থেকে সে লাভ করেছে ইলমের নূর। ইলমের মাধ্যমে মানুষ নবজন্ম লাভ করে। আল্লাহর মারিফত যখন মানুষের মধ্যে আসে তখনই সে প্রকৃত মানুষ হয়।

তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত শিক্ষিত সম্মান ও শ্রদ্ধা বজায় রাখা তাদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্মান করা, কারণ একমাত্র শিক্ষকই পারে একটা সমাজকে পরিবর্তন করতে, আল্লাহতালা আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুক, শিক্ষকদের সম্মান বুঝার এবং বুঝে আমল করার,,,

وَمَا أُرِيدُ إِلَّا الْإِصْلَاحَ مَا اسْتَطَعْتُ ۚ وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ ۚ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ.

وَآخِرُ دَعْوَانا أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ









 



Comments