আল্লাহর জন্য কোনো মানুষকে ভালোবাসা এবং তার জন্যই কিছু মানুষ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার।
কোনো ব্যক্তিকে বলতে পারা বা কারো থেকে শুনতে পারা এই কথার আনন্দ ও অন্যরকম যে,তোমাদেকে বা তোমাকে আমি ভালোবাসি সেটা শুধু আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি,
কারোকে আল্লাহর জন্যই ভালবাসাথে এবং আল্লাহর জন্যই ঘৃণা করা অনেক বার পড়েছি হুজুদের মুখে শুনেছি কিন্তু বাস্তবে অনুভব করতে পারিনি বা সেটা অনুভব করা ও সম্ভব না যতক্ষণ বাস্তবে কোনো মানুষ কে শুধু আল্লাহর জন্য ভালোবাসা নাকি যাই, কিন্তু যখন কারোকে সত্যিই আপনি ভালোবাসবেন আল্লাহর জন্য তখন এই কথার স্বাদ ও বুজবেন।
তাই এমন আল্লাহ ওয়ালা কারোকে খুজুন এবং খেঁজে তাকে বলুন আপনাকে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি,
আর যদি আপনার আশেপাশে এমন কোনো ব্যক্তি থাকে সে দ্বিনের সকল বিষয়ের জ্ঞান রাখে কিন্তু তা ও সে দ্বীন থেকে গাফেল, তাহলে তাকে ও জানিয়ে দেন আপনি তাকে ঘৃণা করেন সেটা ও শুধু আল্লাহর জন্যই ।
আর যখন আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ঘৃণা করবো , তখন মূলত খারাপ মানুষ টিকেই পরিত্যাগ করা হবে।
আর যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মনে নিয়ে কাউকে ভালবাসবো তখন মূলত আমাদের নিজেদেরই ভালো হবে ও উপকার হবে,কারণ তখন আমরা একজন সৎ ও ভাল মানুষটিকেই সঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছি কথায় আছে না সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ, অর্থাৎ ভালোর সাথে চলা ফেরা করলে ভালো হওয়া যাই আর খারাপ এর সাথে চলা ফেরা করলে খারাপ হওয়ার সুম্ভাবনা বেশি।
তাই আমরা যখন আমাদের জীবন পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে সব কিছুর থেকে আল্লাহ তাঁয়ালাকে অনেক বেশি ভালোবাসা ও প্রধান্য দেবি,তখন ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাঁয়ালা ও আমাদেরকে অন্যদের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিবেন ।
আর যখন আরশের মালিক ও জমিনের মালিক আল্লাহ তাঁয়ালা তার কোনো বান্দার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান, তখন জিব্রাইল (আ:) কে ডেকে বলেন, আমি আমার এ বান্দাকে ভালোবাসি, তাই তুমিও তাকে ভালোবাসো ।
জিব্রাইল (আ:) তখন সে বান্দা কে ভালোবাসতে শুরু করেন এবং আসমানের সকল ফেরেশতাদেরকে বলেন আল্লাহ এই বান্দাটা কে ভালোবাসেন, আর তোমরাও তাকে ভালোবাসো।
এ খবর পৌঁছে যায় জমিনেও, আল্লাহ সুবহানাতায়ালা জমিনের প্রত্যেকের অন্তরে তাঁর প্রিয় বান্দার প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে দেন ।
যার প্রতি সবচাইতে ভালোবাসা বেশি হওয়া উচিত তিনি হচ্ছেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা যিনি সবচেয়ে নিকটে, সবচেয়ে আপন,আমাদের অন্তরে যা কিছু আছে এবং মুখে যা কিছু প্রকাশ করি সকল কিছু তিনি জানেন, আমাদের সকলের অভিভাবক, আমাদের ভুলে করা বা ভুলের পরে ক্ষমা চাওয়ার, কিছু প্রয়োজন হলে তার কাছে চাওয়া এই পৃথিবীতে চলাফেরা করতে যা যা প্রয়োজন সকল কিছুর জন্য একমাত্র নির্ভরযোগ্য জায়গা হলে একমাত্র আমাদের আল্লাহ তাঁয়ালা। যিনি আমার সৃষ্টি কর্তা, ও পালন কর্তা।
আর আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসা ও তাকে পাওয়া সন্তূষ্টির ইচ্ছাই হতে হবে আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ। কারণ আল্লাহকে খুশি করা ছাড়া আমরা দুনিয়ার জীবন পার করে দিতে পারবো ঠিকি কিন্তু দুনিয়ার জীবন পার করা মানে তো আমাদের শান্তি না কেননা দুনিয়ার জীবন ক্ষনস্তায়, আখেরাতের জীবন হলো চিরস্থায়।
"ক্ষনস্থায় জীবনের সুখের জন্য চিরস্তায় জীবন নষ্ট করা বোকামি ছাড়া কিছুই না"
আর এ ব্যাপারে তার দলীল হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, তিনি বলেছেন:
« مَنْ أَحَبَّ لِلَّهِ ، وَأَبْغَضَ لِلَّهِ ، وَأَعْطَى لِلَّهِ ، وَمَنَعَ لِلَّهِ فَقَدِ اسْتَكْمَلَ الإِيمَانَ » . (رواه أبو داود ).
“যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসল, আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করল, আল্লাহর জন্য কাউকে দান করল এবং আল্লাহর জন্য কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকল, সে ব্যক্তি নিজ ঈমানকে পূর্ণতা দান করল।”
আর এর উপর ভিত্তি করে মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহর সকল সৎবান্দাকে ভালোবাসবে এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করবে; আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ অমান্যকারী আল্লাহর সকল বান্দাকে ঘৃণা করবে এবং তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে; তাছাড়া এটা মুসলিম ব্যক্তিকে তার কোনো কোনো ভাইকে আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে বেশি মহব্বত ও আন্তরিকতার কারণে ভাই ও বন্ধু বলে গ্রহণ করতে কোনো মানা নেই; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের ভাই ও বন্ধু গ্রহণ করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করে বলেন:
« الْمُؤْمِنُ آلِفٌ مَأْلُوفٌ ، وَلَا خَيْرَ فِيمَنْ لَا يَأْلَفُ وَلَا يُؤْلَفُ » . (رواه أحمد و الطبراني و الحاكم ).
“মুমিন ঘনিষ্ঠ ও বন্ধত্বপূর্ণ ব্যক্তি; আর সে ব্যক্তির মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই, যে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ নয়।”
তিনি আরও বলেন:
« إنّ حولَ العرشِ مَنابِرُ من نورٍ، عليها قومٌ لباسُهم نورٌ ووجوهُهم نورٌ، ليسوا بأنبياءَ ولا شهداءَ ، يَغْبِطُهُمْ الأنبياءُ والشهداءُ ، فقالوا: يا رسولَ اللّهِ صِفْهُمْ لنا ، فقال: هم المُتَحَابُّونَ في اللّهِ عزّ وجلّ ، والمُتَجالِسُونَ في اللّهِ تعالى ، والمُتَزَاوِرُونَ في اللّهِ تعالى» .
(رواه النسائي ).
“আরশের চারিপাশে কতগুলো নূরের মিম্বার রয়েছে, যেগুলোর উপর একদল লোক অবস্থান করবে, যাদের পোশাকে নূর এবং চেহারাতেও নূর, তারা নবী নন এবং শহীদও নন, তাদের প্রতি ঈর্ষা করবে নবী ও শহীদগণ; সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জন্য তাদের একটা বর্ণনা পেশ করুন; তখন তিনি বললেন: তারা হলেন আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে একে অপরকে মহব্বতকারী, পরস্পর আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্য বন্ধুত্ব স্থাপনকারী এবং আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে একে অপরের সাথে সাক্ষাৎকারী।”
আল্লাহ তাঁয়ালা আমাদের এমন ভাবে দুনিয়াতে চলতে পারার তোফিক দান করুণ।
Comments
Post a Comment