আলহামদুলিল্লাহ আগামী কাল থেকে আমাদের বাংলাদেশের সকল মুসলিম পরিবার গুলোর রোযা রাখবো! আল্লাহ আমাদের সকলকে রমজানের রোজা সঠিক গুরুত্ব দিয়ে রমজানের রোজাগুলো রাখার তৌফিক দান করুন।
রমজান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। (সুরা বাকারা: ১৮৫)
এর দ্বারা বুঝা যাই ইসলামে অন্যান্য মাস সমূহের মধ্যে রমজান মাসের বিশেষ কিছু গুরুত্ব ও সম্মান রয়েছে,
আর রমজান মাস হলো ঐ মাস যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছিল; মানবজাতির জন্য আল কুরআন একটি হেদায়েত এবং হেদায়েতের সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং মানদণ্ড [সঠিক ও ভুলের]।
তোমাদের মধ্যে যদি কেউ বেঁচে থাকে তবে সে যেনো এই মাসে রোজা রাখে এবং যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে রোয়ার গণনা পূরণ করবে।
আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য চান; তিনি তোমাদের জন্য কষ্ট না চান; আর এটাই যে, তোমার সময়কাল পূর্ণ হবে এবং তোমার হেদায়েতের জন্য আল্লাহকে মহিমান্বিত করতে হবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।
**মুসলমানদের ধারণা যে,সমস্ত ধর্মগ্রন্থ রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছিলো,ইব্রাহিম, তাওরাত, সাম, যাবুর এবং কুরআনের লিখিত গ্রন্থগুলি প্রথম, ষষ্ঠ, দ্বাদশ, ত্রয়োদশকে (কিছু উৎসে, আঠারোতম) হস্তান্তর করা হয়েছে,
রমজানের শেষ দশ দিনের যে পাঁচটি বিশেষ সংখ্যাযুক্ত রাত আছে তার মধ্যে একটি রাত শবে কদর সম্পর্কে মুহাম্মাদ তার প্রথম কুরআনীক ওহী পেয়েছিলেন বলে জানা যায়। যদিও মুসলমানদের প্রথমবার হিজরির দ্বিতীয় বছরে (৬২৪ খ্রিস্টাব্দ) রোজা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছিলো,তারা বিশ্বাস করে যে রোজা পালনের বিষয়টি বাস্তবে একেশ্বরবাদের উদ্ভাবন নয়। বরং মুমিনদের তাকওয়া অর্জন (আল্লাহর ভয়) করা সর্বদা প্রয়োজনীয় ছিল[কুরআন ২:১৮৩]
রমজানের রোজা ও ইবাদতে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় অনেক বেশি। আল্লাহ তাঁয়ালা ছোট ছোট আমল এ ও বন্দার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
**এই মাসটা মুসলিমানের জন্য কিছুনা ব্যবসার মাস বললে ও ভুল হবেনা, অর্থাৎ আমরা যারা বিভিন্ন ব্যবসা করি তারা অবশ্যই জানি যে আমাদের সব সময় তেমন লাভ হয়না, কিছু সময় খুব বেশি হয়, আবার কিছু সময় খুব কম হয় আবার আমরা অনেক সময় আগে থেকেই জানি যে এই মাসের লাভ হবে না, আবার এইটা ও জানি যে সামনের মাসে আমাদের অনেক বেশি লাভ হবে। যারা শিজনের ব্যবসা করি তারা পণ্য গোদাম জাত ও করি যদি ও এটা ইসলামে বৈধ না টা করি কিছু মানুষ করে লাভের আশায়। যারা ছোট বাচ্চার খেলনা বিক্রি করি তারা অবশ্যই জানে বা ধারণা রাখে যে মেলাতে গেলে অবশ্যই লাভ হবে।ঠিক মুসলমানদের জন্য আল্লাহর কাছ থেকে জান্নাত লাভের ও নিজের গুলাহ ক্ষমা করে নেওয়ার একটা বিশেষ অফার বললে ও ভুল হবেনা, যে ব্যক্তি এই অফার এ পা রাখলো সে যেনো ঐ সময় থেকেই আল্লাহর কাছে চাওয়া শুরু করে দেয়,কারণ বলাতো যায়না রোযায় পদার্পন করার কিছুক্ষন পরে ও তো তার মৃত্যু হয়ে যেতে পারে।
আর লাইলাতুল আর কদরের রাত যেহেতু নির্দিষ্ট না, তাই আমাদের প্রত্যেকের বিজোড় রাতগুলোতেই লাইলাতুল কদরকে খুঁজা এবং সে লক্ষে রাত যাপন করা, সালাত ও আমলে থাকা...
••রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের দিবসপূর্ব রাতগুলোর কোনো একটি রাত লাইলাতুল কদর।
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰهُ فِیۡ لَیۡلَۃِ الۡقَدۡرِ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِلَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ خَیۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَهۡرٍ تَنَزَّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ فِیۡهَا بِاِذۡنِ رَبِّهِمۡ مِنۡ کُلِّ اَمۡرٍ سَلٰمٌ هِیَ حَتّٰی مَطۡلَعِ الۡفَجۡرِ
নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল কদরে।’ তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল কদর’ কী? ‘লাইলাতুল কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত। (সুরা কাদর: ১-৫)
**এই মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ব্যক্তির উপর সাওম (রোজা)পালন ফরয, কিন্তু অসুস্থ, গর্ভবতী, ঋতুবর্তী নারীদের ক্ষেত্রে তা শিথিল করা হয়েছে। রোজা বা সাওম হলো সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পঞ্চইন্দ্রিয়ের দ্বারা গুনাহের কাজ এবং (স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে) যৌনসঙ্গম থেকে বিরত থাকা,
এবং এই রজনীকে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলেছেন। এ রাতে ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের থেকেও অধিক সওয়াব পাওয়া যায়।এই মাস রমজান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। (সুরা বাকারা: ১৮৫)
রমজানে রোজা ও ইবাদতে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। আল্লাহ গুনাহ মাফ করে দেন।
**হয়তর আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমজান মাসে সিয়াম পালন করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমজানের রাত নামাজে দাঁড়িয়ে কাটাবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় লায়লাতুল কদর ইবাদাতে কাটাবে তারও আগের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে।
(সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
এই মাসে যে কোনো ইবাদতের সওয়াবই বহুগুণ বেড়ে যায়। যেমন রমজানের প্রত্যেকটি নফল ইবাদতের সওয়াব ফরজ ইবাদতের সমান।
প্রতিটি ফরজ ইবাদতের সওয়াব হয় সত্তরটি ফরজ ইবাদতের সমান।
আর সুন্নাত আমল ও বেড়ে ফরজ এর জায়গায়।নফল এর সওয়াব আসে সুন্নত এর জায়গায়।
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘পবিত্র রমজনের একটি রাত বরকত ও ফজিলতের দিক থেকে হাজার মাস থেকেও উত্তম।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহর রাসুলকে (সা.) তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি যদি কদরের রাত পেয়ে যাই তবে কী দোয়া পড়বো? আল্লাহর রাসুল বলেন, তুমি বলবে
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি
**তাই এই রাতে বেশি বেশি দোয়া পাঠ করা,
নিজের গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে, কুরআন তেলাওয়াত করা, ও অনেক কর্ম জীবি মানুষেতরা অন্যান্য সময় সালাতুল তাজবিহের নামাজটা পড়ার সময় পাইনা, আর এই মাসটা যেহেতু সকলে একটু ফ্রি থাকি তাই চেষ্টা করা রমজানের মধ্যে সালাত তাজবিহ নামাজ আদায় করা আর যদি তাও না পারে তাহলে চেষ্টা করা শেষের ভিডিও রাত অর্থাৎ শবে কদর যে যে রাতগুলোতে আমরা খুঁজবো ওই রাতে সালাতুত তাজবিহের নামাজও আদায় করে নেয়া, আর যদি কারো ফরজ নামাজ খাজা থাকে তাহলে সে যেন এই রাতগুলোতে তার কাজা নামাজ আদায় করে,
**আর যারা পুরা রমজান মাস জুড়ে রাতে ইবাদত করতে চাই, তাদের এই জিনিসটা ও খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনার আমলের কারণে যেনো প্রতিবেশীর কোনো ক্ষতি না হয়।
এই মাস জুড়ে মানুষের কোনো ক্ষতি না হয় মতো চলাফেরা করতে হবে, এখন প্রশ্ন আস্তে পারে তাহলে কী অন্য মাসে মানুষের ক্ষতি করা যাবে?? সেটার উত্তর ও না। তবে এই মাসে এইগুলোর প্রতি খেয়াল করতে বলার কারণ হলো রমজান যেমন আমাদের প্রতিটা কাজের সওয়াব বেশি, তাহলে তো বুঝা যাচ্ছে, ভালো কাজের জন্য যেমন সম্মান বেশি খারাপ কাজের জন্য ও তো খারাপি বেশি হতে পারে, তবে আল্লাহু আ'লাম আল্লাই ভালো জানে, তবে আমরা রমজান মাসে নিজেকে সম্পর্ণ আলাদা করে চলাফেরা করবো, কারোকে গালি দিবো না, কেউ গালি দেয় এমন করে চলাফেরা করবোনা, আর অন্য মাসে ও ঠিক এইভাবে চলতে পারার জন্য নিজেকে তৈরী করে নিবো,ইনশাআল্লাহ।
মিথ্যা কথা বলা থেকে নিজেরকে দূরে রাখা, নিজের সমার্থ অনুযায়ী দান সদকা করা, ফিতরা আদায় করে দেওয়ার, যদি যাকাত আসে তাহলে যে যাকাত খাওয়ার অধিকার রাখে তাকে যাকাতের মাল বা টাকা দিয়ে দেওয়া। সকলের সাথে ভালো আচরণ করা।
এ মাসের রোজাকে আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন এবং এর রাতগুলোতে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোকে নফল ইবাদত রূপে নির্দিষ্ট করেছেন। যে ব্যক্তি রমাযানের রাতে ফরজ ইবাদত ছাড়া সুন্নত বা নফল ইবাদত করবে, তাকে এর বিনিময়ে অন্যান্য সময়ের ফরজ ইবাদতের সমান সওয়াব প্রদান করা হবে। আর যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো ফরজ আদায় করবে, সে অন্যান্য সময়ের ৭০টি ফরজ ইবাদতের সমান পুণ্য লাভ করবে।’ (বায়হাকি)
আল্লাহ তাঁয়ালা আমাদের সবাইকে রমজান মাসের সঠিক সম্মান বজায় রেখে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাতদ ও নেক আমল করার তৌফিক দান করুন।
(আমিন )
সুম্মা আমীন.......
Comments
Post a Comment